কিডনি ইনস্টিটিউটে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ, চরম দুর্ভোগে রোগীরা
আপলোড সময় :
২৭-০৫-২০২৫ ১০:২৩:৫৩ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় :
২৭-০৫-২০২৫ ১০:২৩:৫৩ পূর্বাহ্ন
রাজধানীর জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউটে (নিকডু) রোগীদের ডায়ালাইসিস সেবা দেওয়া বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন করেছেন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্যানডোর কর্মীরা। এই কর্মবিরতিতে চিকিৎসা না পেয়ে দুর্ভোগে পড়েন শত শত কিডনি রোগী।
মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল থেকে হাসপাতালটিতে ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ রয়েছে।
ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নিকডুর ডায়ালাইসিস সেন্টারে (স্যানডোর) ব্যবস্থাপক নিয়াজ খান।
তিনি সময়ের আলোকে বলেন, গত তিন মাস ধরে বেতন বন্ধ রয়েছে। তাই বকেয়া টাকা আদায়ে স্যানডোরে কর্মরত চিকিৎসক-নার্সসহ অন্যান্য সেবাকর্মীরা সেবা কার্যক্রম বন্ধের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া নিয়েছে।
এর আগের সোমবারও কিডনি ইনস্টিটিউটে ৩ ঘণ্টার জন্য ডায়ালাইসিস সেবা বন্ধ রেখে কর্মবিরতি পালন করেন স্যানডোর কর্মীরা। তবে ‘মানবিক বিবেচনায়’ সেবা কার্যক্রম চালু করা হয়।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৬ সাল থেকে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) ভিত্তিতে রাজধানীর জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট (নিকডু) এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) ডায়ালাইসিস সেন্টার পরিচালনা করে আসছে ভারতীয় কোম্পানি স্যানডোর ডায়ালাইসিস সার্ভিসেস।ঢাকা ও চট্টগ্রামের দুটি হাসপাতালে সেবা দিচ্ছে স্যানডোর। মোট ডায়ালাইসিসের ১০ শতাংশ করে তারা।
স্যানডোর কর্মীরা জানান, গত তিন মাস ধরে বেতনহীন। সরকার তাদের প্রায় ৭ কোটি টাকা বকেয়া পরিশোধ করেনি। গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর- ছয় মাসের বিল আটকে ছিল। জানুয়ারিতে সেটি দেওয়ার কথা থাকলেও তা মেলেনি। এরপর থেকে কোম্পানি মালামাল কিনতেও হিমশিম খাচ্ছে।
সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান স্যানডোরের কনসালটেন্ট ডা. শামসুন্নাহার জানান, গত ঈদের আগেও আমাদের কর্মীরা বেতন পাননি, কেবল সামান্য অগ্রিম পেয়েছেন। এখন আরেক ঈদ চলে এসে এসেছে। টাকা পয়সা ছাড়া তারা কীভাবে ঈদ পালন করবে? টানা তিন মাস ধরে বেতন নেই, ফলে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন নার্স, টেকনিশিয়ান ও অন্য কর্মীরা।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরের বিল বাকি আছে। এ বিল সাধারণত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে দিয়ে দেয়া হয়। কোম্পানি বিল থেকে ডায়ালাইসিসের প্রয়োজনীয় উপকরণ কেনে এবং আমাদের বেতন দেয়। "কিন্তু, তিন মাস ধরে বেতন বাকি থাকায়- নার্স-টেকনোলজিস্টরা কেউ কাজ করতে চাচ্ছে না। গত ঈদে আমিও বেতন পাইনি। তিন মাস ধরে বেতন পাচ্ছি না। আমরা স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে কোনও আশ্বাস পাইনি।
এ ব্যাপারে জাতীয় কিডনি ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক ডা. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, স্যানডোরের কর্মীরা সোমবার থেকে দুপুরে কর্মবিরতি শুরু করলে ডায়ালাইসিস সেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। যদিও পরে রোগীদের দুর্ভোগ বিবেচনায় তারা আজকের মতো আবার কাজ শুরু করেছে। কিন্তু আজ সকাল থেকে সেবা বন্ধ হওয়ায় শত শত কিডনি রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
তিনি জানান, এই আর্থিক সংকটের দায় হাসপাতালের নয়। স্যানডোর সরকারের কাছে টাকা পায়, আর কর্মীরা তাদের কাছে। বিষয়টি পুরোপুরি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে রয়েছে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : mainadmin
কমেন্ট বক্স